ঢাকা , মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
দেশে অনিবন্ধিত কারখানা প্রতিষ্ঠান প্রায় দেড় লাখ ডিআরইউতে জনশক্তি রফতানিকারকদের দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আওয়ামীপন্থি ৬১ আইনজীবীর জামিন স্থগিতই থাকছে রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির কারণে অচলাবস্থা নিরসনের দাবি সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের রাখাইনে করিডোর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে- কাদের গনি চৌধুরী ভারতীয় আধিপত্য-ধর্মীয় উগ্রতাসহ ৭ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট এনসিপির এস আলমসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন রপ্তানি বহুমুখীকরণে নানা বাধা, বিপর্যয়ের শঙ্কা পাকিস্তানের হামলায় ভারতের সীমান্তে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস ক্যানসারে আক্রান্ত বাইডেন গাজায় আরও দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় সরিয়ে নেয়ার খবর সত্য নয়: মার্কিন দূতাবাস আলোচনায় বসবে পাকিস্তান, চীন ও আফগানিস্তান রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেলো অ্যাতলেতিকো সেভিয়ার সাথে জয় পেলো রিয়াল ভিয়ারিয়ালের কাছে হারের স্বাদ পেলো বার্সা আইপিএলে ডাক পেলেন মুজারাবানি এশিয়া কাপে থেকে নাম প্রত্যাহারের খবর অস্বীকার করলো বিসিসিআই পিএসএল খেলার জন্য এনওসি পেলেন মিরাজ এবার লাহোরে ডাক পেলেন মিরাজ
সিন্ডিকেটে জিম্মি

বঞ্চিত কৃষক, তরমুজের দাম নির্ধারণ করেন আড়তদার

  • আপলোড সময় : ২৮-০৩-২০২৫ ১২:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৩-২০২৫ ১২:৩৩:৩২ পূর্বাহ্ন
বঞ্চিত কৃষক, তরমুজের দাম নির্ধারণ করেন আড়তদার
এ বছর ভোলার চরাঞ্চলে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সেই তরমুজ বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। চাষি থেকে সর্বোচ্চ ৬০-১৮০ টাকায় তরমুজ কিনে হাতবদলে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০-৫৫০ টাকায়। কৃষকদের অভিযোগ ভোলা, বরিশাল ও ঢাকার পাইকারি বাজারগুলোতে সিন্ডিকেট করে তাদের থেকে কম মূল্যে তরমুজ কেনেন আড়তদার ও পাইকারি ক্রেতারা। তারা আড়তে তরমুজ নিয়ে গেলে আড়ৎদাররাই প্রথমে দাম ঠিক করে নিলাম ডাকেন। সেখানে সর্বোচ্চ দাম দিয়ে কিনে নেন খুচরা বিক্রেতা। এরপর তিনি ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করেন। কিন্তু এই চক্রে সবচেয়ে কম লাভ হয় কৃষকের। পরিবহন খরচ বাদ দিলে প্রতি পিস তরমুজে তার লাভ থাকে ২৫-৩৫ টাকা।
সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে। কৃষকরা দল বেধে তাদের ক্ষেত থেকে তরমুজ কেটে ট্রাক ও ট্রলারে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন ভোলা, বরিশাল ও ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি বাজার ও আড়তে।
ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চরচটকিমারা এলাকার কৃষক মো. হারুন ও মো. রফিজল জানান, চলতি মৌসুমে মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় তাদের ক্ষেতে তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে। সর্বনিম্ন ৫ কেজি থেকে ১৪ কেজি ওজনের তরমুজও তাদের ক্ষেতে ধরেছে। কিন্তু পাইকারি বাজারে তরমুজ বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। আড়তদার ও পাইকারদের সিন্ডিকেটে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। তাই কম দামেই তরমুজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের বাঘমারা ব্রিজ সংলগ্ন রাবেয়ার চরের কৃষক মো. জসিম ও মো. শাহাবুদ্দিন জানান, পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি তারা। আড়তদার ও পাইকারি ক্রেতারা সিন্ডিকেট করে তাদের থেকে ৮-১২ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ সর্বোচ্চ ১৮ হাজার টাকা, ৫-৭ কেজি ওজনের একশো পিসে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার টাকা ও ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের একশো তরমুজে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। এরমধ্যে আবার পরিবহন খরচ বাদ দিলে প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে মাত্র ২৫-৩৫ টাকা। তারা আরও জানান, ট্রাক ও ট্রলার ভাড়া নিয়ে ভোলা, বরিশাল ও ঢাকার পাইকারি বাজারে তরমুজ নিয়ে বিক্রি করতে না পারলে দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হয়। এজন্য সিন্ডিকেট বুঝেও বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হয়। তাদের দাবি বাজারে সিন্ডিকেট না থাকলে কৃষকরা লাভবান হতো। এতে আগামীতে তরমুজের আবাদ আরও বৃদ্ধি পেতো। তবে ভোলার পাইকারি আড়তদার মো. আব্দুল বাশার কামরুল জানান, কৃষকরা তাদের কাছে তরমুজ আনছে, তিনি পাইকারি ব্যবসায়ীদের সামনে ওপেন নিলাম দেন। ওই সময় যে বেশি দাম বলে সেই ওই তরমুজ ক্রয় করে। ভোলার বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। তবে তারা আড়ৎদাররা মোট বিক্রির ১০ ভাগ কমিশন পেয়ে থাকেন। তবে বাজারে তরমুজ নিলামের প্রথম দাম কে নির্ধারণ করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যে আড়ৎদারের মাধ্যমে কৃষক তরমুজ বিক্রি করেন সেই আড়তদারই প্রথম দাম নির্মাণ করে ডাক ধরেন। এরপর যে বেশি দাম ধরে সেই কিনতে পারে। কৃষকের তরমুজের তারা কেন দাম নির্ধারণ করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা কৃষকদের তরমুজ চাষ করার জন্য দাদন দেন। তাই কৃষকরা তাদের মাধ্যমেই তরমুজ বিক্রি করেন থাকেন। আর বরিশাল ও ঢাকার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
ভোলা শহরের খালপাড় এলাকার খুচরা তরমুজ বিক্রেতা মো. ইব্রাহীম ও তাহের জানান, তারা কাঁচাবাজারের পাশের পাইকারি বাজার থেকে নিলামে অংশগ্রহণ করে তরমুজ শতক হিসেবে কিনে থাকেন। পরে সেই তরমুজ তারা বাজারে খুচরা পিস হিসেবে বিক্রি করেন। কিন্তু তরমুজ বিক্রি করতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হয়। যে তরমুজ পাইকারি ১৫০-২০০ টাকা ক্রয় করেন, সেটি খুচরা বাজারে ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়। আবার যেগুলোর ওজন আরও বেশি, সেগুলো আরও বেশি দামে বিক্রি করেন। আর বেশিতে না বিক্রি করলে তাদের কিছু থাকে না। কারণ তরমুজ বিক্রি করতে না পারলে পচে যায়। এতে লোকসানের মধ্যে পড়তে হয়।
ভোলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বলেন, কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় এবং আড়ত ও পাইকারি-খুচরা বাজারে যাতে তরমুজের বেশি দাম না হয় সে লক্ষ্যে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। কেউ যদি বেশি দামে বিক্রি করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. খায়রুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ভোলার সাত উপজেলায় ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে। আগামীতে ভোলায় তরমুজের আবাদ আরও বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
ভারতীয় আধিপত্য-ধর্মীয় উগ্রতাসহ ৭ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট এনসিপির

ভারতীয় আধিপত্য-ধর্মীয় উগ্রতাসহ ৭ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট এনসিপির